"খনন আদি" দুটি খুনের রহস্য ও আইনী জটিলতার লড়াই
বেলঘড়িয়া এথিকের নবতম প্রযোজনা খনন আদি অভিনীত হলো, গিরিশ মঞ্চে। নাটকটির বিষয় ভবনা ও নির্দেশনা, চরিত্র নির্মাণ ও সংলাপ- আলো- আবহ চতুষ্কোণে ২ ঘণ্টা চুম্বকের মত আকর্ষণ করে রাখে দর্শকদের, যার রেশ থেকে যায় শেষের পরেও।মূলত রহস্যের আঙ্গিকে উপস্থাপিত হলেও নাটকের শেষে রহস্য উন্মোচিত হয়না , থেকে যায় ওপেন এন্ডেড খুন হয়েছে, রথীন্দ্র প্রতাপ সিংহা,নিজের বেডরুমে।তিনি শহরের সবচেয়ে ক্ষমতা ও প্রভাবশালী ড্ন। তার প্রাসাদের নাম মহাকাব্য । তদন্তের দায়িত্ব পান শহরে নতুন পোস্টিং পাওয়া এ সি পি ইন্টেলিজেন্স সমুদ্র বর্মন। খুনের প্রধান সাসপেক্ট ব্যারিস্টার ঋষি সেন,তাকে রাখা হয় হাউস অ্যারেস্টে। কারণ ঠিক পঁচিশ বছর আগে তার একমাত্র মেয়ে ভূমিকা খুন হয়েছিল রথীন্দ্র প্রতাপের হাতে।কিন্তু মৃত্যুর অসংখ্য কারণ ছড়িয়ে চার পাশে, রথীন্দ্র এর তিন স্ত্রী,চার ছেলে,বিপুল সম্পত্তি এর মালিকানা, রিভাল গ্যাং, দক্ষিণের বিজনেস এক্সটেনশনএবং তিনি খুন হন, নিজের সুরক্ষিত বেডরুমেই। হটাৎ সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত এক ব্যক্তি সামনে এসে খুনের দায় ভার স্বীকার করেন। কিন্তু কেনো? তাকে এই অপরাধী কে বাঁচাতে ঋষি সেন নামেন আইনি লড়াইয়ের শেষপর্যন্ত অপরাধী কে? নাটকের সংলাপ অত্যন্ত শক্তিশালী, যা ভাবতে ও ভাবাতে বাধ্য করে। সমুদ্র বর্মণের চরিত্রে শান্তনু দাস, ঋষি সেন এর চরিত্রে দেবাশিস সেনগুপ্ত, কস্তুরী সিংহা এর চরিত্রে কাকলি মজুমদার ও ভিকি এর চরিত্রে শুভম মিত্র এর অভিনয় নাটকের মেরুদন্ড। এছাড়াও নাটকের প্রত্যেকটি চরিত্র নিজের মত করে সম্পূর্ন, নতুন এক ঝাঁক তরুণ অভিনেতা মৃত্যুঞ্জয় রায়,তাপস সরকার, সুরঞ্জনা দাস,কেয়া কুন্ডু, অর্ণব দত্ত ও এষনা সেন এর কাজেও রয়েছে যত্নের ছাপ। সৌমেন চক্রবর্তী এর আলোক ভাবনা ও প্রয়োগ নাটকটিকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়, তিনি মঞ্চে নতুন ব্যাকরণ সৃষ্টি তে সফল। তপন বিশ্বাসের আবহ নির্মাণ ও মদন হালদার এর মঞ্চ ভাবনা সৃষ্টি কে সম্বৃদ্ধ করে।প্রথম অভিনয় এর পর এই নাটক টির আরো বেশি করে দর্শকদের মস্তকে- মননে পৌঁছানোর দাবিদার তা প্রমাণিত। ততাকথিত তারকাহীন ভাবে বেলঘরিয়া এথিকের এই ছন্দবদ্ধ নির্মাণ আরো সফল হবে, নতুন অভিনেতা দের অভিনয় কুশল আরো ধারালো হবে এই ভরসা রাখি। নাট্যকার ও নির্দেশক দেবাশিস সেনগুপ্ত র নির্দেশনায় এই নাটক সকল নাট্যমোদি দর্শকদের ভালো লাগবে।